খুলনা প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি, বর্ষীয়ান সাংবাদিক শাহাবুদ্দিন আহমেদ মারা গেছেন।
বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার রাত তিনটার দিকে তার মৃত্যু হয়।
শাহাবুদ্দিনের বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। চিরকুমার এই সাংবাদিক মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ঢাকার বসুন্ধরায় এক নিকটাত্মীয়ের বাসায় অবসর যাপন করছিলেন।
বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বড় জামে মসজিদে জোহরের নামাজের পর জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হবে।
শাহাবুদ্দিন আহমদ ১৯৩৯ সালের ১ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। মানিকগঞ্জে তার পৈত্রিক বাড়ি। বাবার চাকরির সুবাদে খুলনাসহ বিভিন্ন স্থানে লেখাপড়া করেন তিনি। সর্বশেষ শিক্ষাজীবন দৌলতপুর সরকারি বিএল কলেজ।
শিক্ষাজীবন শেষে তৎকালীন রূপসা থানার বেলফুলিয়া ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ফাতিমা উচ্চ বিদ্যালয় এবং চালনা পোর্ট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বিভিন্ন সময়ে শিক্ষকতা করেন।
তিনি ১৯৬২ সালে শরীফ কমিশন রিপোর্টবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেন। পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গেও সম্পৃক্ত ছিলেন। ১৯৬৫ সালে খুলনার স্থানীয় পত্রিকার মাধ্যমে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত হন।
৪৪ বছরের পেশাগত জীবনে সাপ্তাহিক হলিডে, বাংলাদেশ টাইমস, দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফ, ডেইলি ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস ও দ্য ডেইলি ইনডিপেনডেন্ট পত্রিকায় কর্মরত ছিলেন।
ইনডিপেনডেন্ট পত্রিকায় ১৩ বছর দায়িত্ব পালন শেষে বার্ধক্যজনিত কারণে ২০০৯ সালের ৯ সেপ্টেম্বর সাংবাদিকতা থেকে অবসর নেন।
১৯৭০-৭১ সালে করাচির প্রভাবশালী দৈনিক ডন পত্রিকার খুলনা প্রতিনিধি ছিলেন শাহাবুদ্দিন। তিনি ১৯৮০, ১৯৮২ ও ১৯৮৪ সালে অবিভক্ত খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ছিলেন।
১৯৮৫-৮৬, ১৯৯২-৯৩, ১৯৯৫-৯৬, ১৯৯৯-২০০০ মেয়াদে খুলনা প্রেস ক্লাবের সভাপতি নির্বাচিত হন শাহাবুদ্দিন। সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদান ও বিতর্কের ঊর্ধ্বে থাকায় ২০০৮ সালে সাদা মনের মানুষ হিসেবে জেলা প্রশাসন থেকে স্বীকৃতি পান তিনি।
স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের আপৎকালীন সাহায্যের জন্য কল্যাণ তহবিল গঠনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেন শাহাবুদ্দিন। বস্তুনিষ্ঠ তথ্যের ভিত্তিতে নিখুঁত সংবাদ পরিবেশনে তিনি খুলনার সাংবাদিক অঙ্গনে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছেন খুলনা প্রেস ক্লাবের সভাপতি এস এম জাহিদ হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক হাসান আহমেদ মোল্লাসহ কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্যরা।